পোল্ট্রি শিল্পের বারে বারে মুখ থুবড়ে পড়ার মুল কারন দক্ষ সাপ্লাই চেইন ডেভেলপ না করা। প্রতি বারে ধ্বসে উৎপাদনকারী ( ক্ষুদ্র বা বৃহদ) পুঁজি খুইয়ে দায় দেনায় জর্জরিত হয়, উৎপাদনে ছেদ পড়ে এবং উৎপাদন সংকুচিত করতে বাধ্য হয় অনেকে, বাড়ে প্রতি ইউনিট উৎপাদন খরচ, এর প্রভাবে কখনো পোল্ট্রি পন্যের দাম বেশি আবার কখনো উৎপাদন খরচ থেকে অনেক অনেক কম। আগে ধ্বস আসত দুই তিন বছর অন্তর অন্তর এখন আসে বছরে কয়েক বার বা সারা বছর জুড়ে।
ব্যাকওয়ার্ডের পন্য যেমন একদিন বয়সী লেয়ার বা ব্রয়লার বাচ্চা, খাদ্য মেডিসিন ভ্যাক্সিন ফাইনালী ব্যবহার করে ব্রয়লার মাংস এবং ডিম উৎপাদনকারীরা।
উৎপাদনকারীদের পন্য যেমন ডিম জীবন্ত ব্রয়লার এবং কার্লড মুরগী ফাইনালী যায় খুচরা ক্রেতা বা ভোক্তার কাছে।
[গ্রেন্ড প্যারেন্ট ফার্ম, প্যারেন্ট ফার্ম,হ্যাচারী, ফিডমিল পরিবহন, ডিলার, খামারী, পাইকারিক্রেতা, মুরগী বিক্রির আড়ৎ, খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতা, সুপারশপ খুচরা বিক্রেতা এবং ক্রেতা।
ভ্যাক্সিন ভিটামিন মেডিসিন আমদানিকারক ডিলার খামারী ]
পোল্ট্রি বিষয়টা যদি আমরা এক কথায় বলতে যাই তাহলে যা দাঁড়ায় ফিড কনভার্ট টু ফুড, ফিড কে ফুডে রুপান্তর করা হয় মুলত দুই ভাবে এক ডিমে দুই মুরগীর মাংসে।
ফিড কে ফুডে রুপান্তর করার এই সিস্টেমে উপরে উল্ল্যেখিত যত গুলো নানান রকমের পন্য উৎপাদনকারী, বিপননকারী টেকনিক্যাল সার্ভিস টিম কোয়ালিটি কন্ট্রোল টিম, ভোক্তা সবাই পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রির সাপ্লাই চেইনের এক একটা অংশ, এর মধ্যে কোন একটি অংশের যদি সার্ভিসে ঘাটতি থাকে তাহলে পুরো সিস্টেমে কম বেশি প্রভাব পড়ে।
এর পরে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই শৃংখলে যুক্ত প্রত্যেকটি এক্টর বা অংশীজনের বিনিয়োগ বা শ্রমের উপযুক্ত লাভ পাচ্ছেন কিনা এবং ভোক্তা তাঁর সামর্থ্যের মধ্যে গুনগত ভাল মানের ব্রয়লার বা ডিম কিনতে পারছেন কিনা যাকে বলে ভোক্তার সন্তুষ্টি।
যে কোন পন্যের নিরবিচ্ছিন্ন সাপ্লাই এবং যুক্ত সকল অংশীদার উপযুক্ত লাভ যেমন পেতে হবে তেমনি ভোক্তাদের জন্য গুনগত পন্য উৎপাদন করে প্রতিযোগিতামুলক দামে ভোক্তার হাতে তুলে দেওয়ার নামই দক্ষ সাপ্লাই চেইন।
বাংলাদেশের পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রির ব্যাকওয়ার্ড লিংকে গত দুই দশকে পৃথিবীর সর্বাধুনিক প্রযুক্তি অটোমেটেড সিস্টেম ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছে যেখানে প্রত্যেক উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ কল্পনাতীত।
কিন্তু ফরওয়ার্ড লিংকেজ পুরোপুরি মিডিয়া নির্ভর হয়ে প্রান্তিক উৎপাদনকারীর নিকট যায় এবং মিডিয়াই এই ইন্ডাস্ট্রির নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় আছে ফলে লাভজনক দক্ষ সাপ্লাই চেইন গড়ে উঠছে না কোন ভাবেই এবং পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রির সাপ্লাই চেইনের সকলে বারে বারে ঝুঁকি তে পড়ছেন, পুঁজি খুইয়ে এই ব্যবসা ছেড়ে দিচ্ছেন। স্থায়ী স্থিতিশীল একটি বাজার ব্যবস্থাও গড়ে উঠছে না।
আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতও একই রকম সমস্যায় জর্জরিত ছিল বর্তমানে সেখানে কন্ট্রাক্ট গ্রোয়িং সিস্টেমে ব্রয়লার এবং ডিম উৎপাদন করছে, হ্যাচারি ফিড মিল প্রান্তিক খামারী সবাই লাভবান হচ্ছেন,দেশের চাহিদা পুরন করে ভারত ডিম এবং ব্রয়লার মাংস রপ্তানি করছে।
পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে সমবায় ফার্মিং এবং উৎপাদন বিপননের মাধ্যমে স্থিতিশীল সাপ্লাই চেইন গড়ে উঠেছে, সেখানে প্রত্যেকে পোল্ট্রি ফার্মিং করে লাভবান হচ্ছেন।
আমাদের দেশে সমবায়ের অভিজ্ঞতা অনেকের নিকট ভাল নয় কিন্তু পোল্ট্রি তে বিনিয়োগকারী (ক্ষুদ্র বা বৃহদ) যাঁরা আছেন সকলের সুরক্ষার জন্য যুতসই কোন কৌশলে দক্ষ সাপ্লাই চেইন গড় তুলে বারে বারে পতন রোধ করা যেতে পারে, তার জন্য ইন্ডাস্ট্রির এক্টরদের এগিয়ে আসতে হবে যা এখন সময়ের দাবি।
Social Plugin